চিকিৎসক-নার্স; তারাই আসলে রিয়েল হিরো: মোসাদ্দেক

শনিবার, ২ মে ২০২০, রাত ১০:০৪


করোনায় আক্রান্ত রোগীর সেবায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন-মরণ লড়াই এবং করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনীতিকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জাতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এসএম আফজাল।

রাজনীতি: করোনার ভ্যাকসিন এখনও বের হয়নি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সেবায় দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের নিয়ে যদি কিছু বলেন?

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:  বর্তমান বিশ্বে যে মহামারী চলছে, এই সংকট মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ডাক্তার এবং নার্সরা যেভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারাই আসলে রিয়েল হিরো। বর্তমান সময়ে তারা যে ফাইটটা করছেন, তারা যে চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন এটা বলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি অবশ্যই চাইব তারা যে কাজটা করছেন, তারা যেন শেষ পর্যন্ত থাকেন। আমার সবাইকে উচিত তাদের কথাগুলো মানা। তাদের যে জবটা দেখেন, আমারা সবাই এখন বাসায় আছি নিজেরা সেভ থাকার চেষ্টা করছি। তাদের সেফটি আসলে কোথায়?

জীবনের পুরোপুরি ঝুঁকি, তাদেরও অবশ্যই পরিবার আছে! তারা সবকিছু ছেড়ে আমাদের জন্য কাজ করছে। আমি মনে করি তারা যে নির্দেশনাগুলো দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনাগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো আমাদের অবশ্যই মেন্টেন করা উচিত এবং মানা উচিত। তাহলেই হয়তো আমরা সেটা কমাতে পারব। কারণ ডে বাই ডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়তে আমরা সচেতন না হলে কোনো ভাবেই করোনার সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে না। আর কোথায় গিয়ে, কখন এই সমস্যার শেষ হবে তাও কিন্তু আমরা বলতে পারছি না।

যেহেতু এ রোগের এখনও কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। অবশ্যই আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়। বাট তার আগে আমাদের সুস্থ রাখার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে নিদেশনা দিয়েছে সেগুলো ফলো করতে হব।

রাজনীতি: করোনার সংক্রমণ এড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ঘরে থেকে, বারবার হাত ধুয়ে পরিস্কার পরিছন্ন থাকার পাশাপাশ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। দেশের একজন তারকা ক্রিকেটার হিসেবে এ ব্যাপারে কিছু বলুন।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:  বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি  বুঝতে পারছি। অবশ্যই আমাদের এ নির্দেশনাগুলো মানতে হবে। যতোটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সেটা অনেক ক্ষেত্রে পসিবল হচ্ছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে চাইলেও পসিবল হচ্ছে না। যারা আসলে দিনমজুর শ্রেণির আছেন, যারা দিন আনে দিন খান এমন টাইপের যারা আছেন তারা চাইলেও সামাজিক দূরত্ব এড়িয়ে চলতে পারছেন না।

একটা মেসেজ তো সবাই দিচ্ছেন, সেটা আমার পক্ষ থেকেও থাকবে- বেশি প্রয়োজন ছাড়া যেন বাসা থেকে বের না হই। এটা ভাবা যাবে না যে গলির মধ্যে তো কোনো আইনশৃংখলা বাহিনীর লোক নেই, একটু ঘুরে আসি। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা কিন্তু কেউ জানি না যে কার কাছ থেকে করোনাভাইরাস আমার মধ্যে অসতে পারে, বা কে করোনায় আক্রান্ত। বাতাসেও তো ভাইরাসটা থাকতে পারে। কাজেই আমাদের ঘরে থাকাই ভালো।

রাজনীতি: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সামাজিকভাবে ঘৃণার চোখে দেখা হচ্ছে- এ ব্যাপারে কিছু বলুন

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:  অনেকে হয়তো বিষয়টা অন্যভাবে নিচ্ছে, তারা হয়তো ভাবছে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয় সে ঘৃণার বা হাসির পাত্র হয়ে গেছে। আসলে এটা মেনে নেয়ার মতো না। মানবিক দিক থেকে দেখলে আমার মনে হয় এগুলো করা ঠিক না। তারা কিন্তু ইচ্ছা করে আক্রান্ত হয়নি। বা এই রোগটা কেউ নিয়েও আসেনি।

সাধারণ মানুষের মতো হয়তো অনেক চিকিৎসক- নার্সও আক্রান্ত হচ্ছেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তারা যখন বাসায় যাচ্ছেন তাদের আশপাশের মানুষ তাচ্ছিল্য করছেন। অথচ চিকিৎসক-নার্সরাই এই সময়ের রিয়েল ফাইটার। তারা নিজের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে আমাদের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন। 

রাজনীতি: করোনায় ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সব খেলাই বন্ধ। এই অবস্থায় ফিটনেস ধরে রাখা কতটা চ্যালেঞ্জিং?

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:  আসলে মাঠে গিয়ে কাজ না করলে ফিটনেস ধরে রাখা কঠিন। বাসায় কাজ করলেও মাঠের মতো প্রোপারলি হবে না। বেকিস হয়তো কিছু নির্দেশনা আমাদের ক্রিকেট বোর্ড থেকে দেয়া হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে একটা করে সিডিউল দেয়া হয়েছে, কি করা লাগবে বা কি করতে হবে। সবার বাসায় হয়তো অনুশীলনের জন্য সেই ইলিমেন্ট নেই। আপনি যে পুরোপুরি ফিট থাকতে পারবেন সেই সুযোগও কিন্তু নেই। যতটুকু সম্ভব হচ্ছে অনুশীলন করছি। আমার যেন একিবারে আনফিট না হয়ে যাই সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। ট্রেনারদের সঙ্গে সবসময়  যোগাযোগ হচ্ছে, আমরা চেষ্টা করছি তাদের পরামর্শ নটেন করার। আমি আশা করি সবাই সেভাবে করছে। বাট কবে আমরা আবার নতুন করে খেলাধুলায় নামতে পারব সেটা কেউ জানি না। আল্লাহই ভালো জানেন।

রাজনীতি:  সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত:  আপনাদেরও ধন্যবাদ।

রাজনীতি/আফজাল

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied