স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন বজলুর রহমান

বৃহস্পতিবার, ২০ মে ২০২১, দুপুর ০৩:৪৬


দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম বজলুর রহমান। ২০ মে ৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পুরস্কার তুলে দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ার ইসলাম নাম ঘোষণার পর পুরস্কারপ্রাপ্তদের ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করেন মরহুম ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম বজলুর রহমানের সহধর্মিণী শাহানারা বেগম। বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাষাসৈনিক এ কে এম বজলুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। একজন নিষ্ঠাবান কর্মী ও সংগঠক হিসেবে একই সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগের দুর্দিনের যোদ্ধা। বারবার জেল খেটেছেন, মাথায় হুলিয়া নিয়ে ফেরারী ছিলেন, অসংখ্যবার নির্যাতিত হয়েছেন। ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এ কে এম বজলুর রহমান। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে রেখেছেন কার্যকরী ভূমিকা।   ১৯৫৪ সালে নরসিংদীর রায়পুরায় যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পান এ কে বজলুর রহমানকে। সেই সময় তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হন। ১৯৫৫ সনে এ কে এম বজলুর রহমান নারায়ণগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ছয় দফার পক্ষে আন্দোলন জোরদার করেন। এ কে এম বজলুর রহমান ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করেন। ১৯৭০ এর পাকিস্তান জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে মূখ্য ভ‚মিকা পালন করেন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে ঝাঁপিয়ে পড়েন সম্মুখ সমরে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনকের নির্মম হত্যাযজ্ঞের পর এ কে এম বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাঁকে ক্যান্টনম্যান্টে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। কিছুদিন পরেই পক্ষাকাঘাতগ্রস্থ হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ১৯৮৮ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি ইন্তেকাল করেন বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী ও সহচর এ কে এম বজলুর রহমান। তিনি ছাড়াও এ বছর আরো ৯ ব্যক্তি ও ১ প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরষ্কার ২০২১ প্রদান করা হয়। প্রয়াত আহসানউল্লাহ মাস্টার ও প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতা পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন। সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহার পাশাপাশি সংস্কৃতিতে এবার পুরস্কার পেলেন চলচ্চিত্রকার-গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও নাট্যজন আতাউর রহমান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সমাজসেবা বা জনসেবায় পুরস্কার পান অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন। গবেষণা ও প্রশিক্ষণে প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পেয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, ৩ লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। রাজনীতি/সাদেক

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied