সিলেট সড়ক বিভাগে হরিলুট, কাজ না করেই ৬ কোটি টাকা বিল উত্তোলন
বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩, রাত ০১:৪৩

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতাধীন মৌলভীবাজার রাজনগর ফেঞ্চুগঞ্জ সিলেট রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য টেন্ডার আইডি ৬০৩৬৫২ পি এম পি মেজর কাজটি ২২ আগস্ট ২০২২ তারিখে সিলেট জোন অফিস থেকে এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি এর অনুকূলে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
এই কাজটিতে সড়কের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন আইটেম ধরা আছে বিগত একটি বছর উক্ত কাজটি চলমান অবস্থায় অনিয়মের কোন শেষ ছিল না।
উক্ত কাজটি সম্পন্ন করতে বেইজমিক্স প্লান্ট যেখানে বাধ্যতামূলক ছিল সেখানে বেশির ভাগ সময় ড্রাম মিক্সড প্লান্ট ব্যবহার করে কাজ পরিচালনা করা হয়েছে।
বিভিন্ন জায়গায় কাজটির বিভিন্ন আইটেম প্রচ্ছন্নভাবে অসম্পূর্ণ রেখে বিগত ১৪ই জুন ২০২৩ ইংরেজি তারিখে উক্ত কাজের আইপিসি নং ৪ এবং চূড়ান্ত বিল অনুমোদন করা হয়। এমতাবস্থায় উক্ত কাজের বিপরীতে পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় চূড়ান্ত বিল ৬ কোটি টাকার মধ্যে আংশিক এক কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ২২ জুন ২০২৩ ইংরেজি তারিখে সিলেট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা কে পরিশোধ করেছেন।
উক্ত কাজটির কোন কোন অংশে বাইন্ডার কোর্স করে ওয়্যারিং কোর্স না করায় বাইন্ডার নষ্ট হয়ে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি রাস্তার প্রশস্তকরন অংশে বাইন্ডার করা হয়নি শুধু বেইস টাইপ করে রাখা হয়েছে। প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত বিল নিয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ির এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার নামে উক্ত কাজটির কার্যাদেশ দেয়া হলেও মূলত কাজটি বাস্তবায়ন করেন সিলেটের জয়দ্বীপ দে পার্থ ও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। জনশ্রুতি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় উক্ত জয়দ্বীপ দে পার্থ হলেন সিলেট সড়ক সার্কেল এর সদ্য বদলি হওয়া তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত'র ঘনিষ্ঠ বন্ধু৷
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত সিলেট সড়ক সার্কেলে কর্মকালীন সময়ে গত ১৫ জুন ২০২১ তারিখে ও ১৭ জুন ২০২১ তারিখে যথাক্রমে সিলেটের স্থানীয় দৈনিক একাত্তরের কথা ও আর টিভির অনলাইন ভার্সনে উৎপল পার্থ রসায়নে পথহারা সওজ ও উৎপল পার্থের হাতে জিম্মি সিলেটের সড়ক বিভাগ শিরোনামে দুটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
যাতে তাদের দুই বন্ধুর সম্মিলিত নানান ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি লুট-পাটের বিশদ বর্ণনা প্রকাশিত হয়। উক্ত কাজটির আনুমানিক তিন থেকে চার কোটি টাকার কাজ বাকি রেখে চূড়ান্ত বিল প্রদানের সময় উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জয়দ্বীপ দে পার্থ'র ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত আলোচিত- সমালোচিত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত সিলেট সড়ক সার্কেলে কর্মরত ছিলেন এবং তার স্বাক্ষরে এই বিলটি অনুমোদন হয।
দেশে বিভিন্ন সময় অনেক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোন কাজ না করে ডিপার্টমেন্ট এর সাথে যোগসাজশে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা লোপাটের যে মহোৎসব করে থাকে তার একটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করল সিলেট সড়ক বিভাগ।
এমএসি/আরএইচ