এডিসি হারুনকে নয়, নিজ স্বামীকে দুষলেন সানজিদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রাত ১১:৪৬


রমনা বিভাগের বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুন অর রশীদ কর্তৃক ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের ঘটনাটি এখন নতুন মোড় নিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানজিদা আফরিন নিপা। 
 
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সানজিদা জানান, ‘আমি ২০১৯ সাল থেকেই হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলাম। গত ৪-৫ মাস ধরে মেডিকেল কমপ্লেক্সিসিটি বেড়ে যায়। আর গত ২ থেকে ৩ সপ্তাহ ধরে বুকের ব্যথাটাও বেড়ে গিয়েছিল। আমি ল্যাবএইড হাসপাতালে দেখাই। সেখানকার চিকিৎসক আমাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে যেতে বলেছিলেন।’
 
তিনি বলেন, “শনিবার আমি চিন্তা করি যে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেই যাই। সেই জন্যে আমি এডিসি হারুন অর রশীদ স্যারকে জরুরি ভিত্তিতে একটা তাৎক্ষণিক এপোয়েন্টমেন্ট নিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। সে অনুযায়ী তিনি ওসির মাধ্যমে একটি এপোয়েন্টমেন্টও ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে সেদিন সন্ধ্যায় যাওয়ার পর জানতে পারি যে ওই চিকিৎসক একটি কনফারেন্সে আছেন। উনি আজকে রোগী দেখবেন না। জরুরি দেখে আমি বিষয়টি আবারও এডিসি স্যারকে জানাই। এরপর স্যার আমাকে বললেন যে ‘ঠিক আছে আপনি থাকেন, আমি এসে দেখি কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা’।”
 
তিনি আরও বলেন, বেশ কিছুক্ষণ পর এডিসি স্যার আসেন, সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করেন এবং একজন চিকিৎসকের এপোয়েন্টমেন্ট নিয়ে তাকে দেখাতে সক্ষম হই। উনি আমাকে বেশকিছু পরীক্ষা করাতে বলেন। আমি সেগুলো করিয়েছিও। যে সময়ের ঘটনা সে সময় আমি ইটিটি করাচ্ছিলাম। এরই একপর্যায়ে আমি ইটিটি রুমের বাইরে হট্টগোল হচ্ছে এমনটা টের পাই। আমি শুনতে পাই এডিসি স্যার বলছেন ‘আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন! এটা তো আপনি করতে পারেন না।’
 
সানজিদা বলেন, আমি প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কারও সঙ্গে ঘটনা। কিন্তু বের হয়ে দেখি আমার স্বামী আজিজুল হক মামুন খুবই উত্তেজিত অবস্থায় ছিলেন। তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন ছেলেও ছিল। তারা সবাই মিলে এডিসি স্যারকে মারতে মারতে রুমের ভেতর নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে আমার স্বামী সেখানে তার সঙ্গে থাকা ছেলেগুলোকে বলছিলেন ‘তোরা ওদের (হারুন এবং সানজিদা) ভিডিও কর।’
 
তিনি বলেন, আমি পরীক্ষা করাচ্ছিলাম দেখে ইটিটির পোষাকে ছিলাম যেটা শালীন নয়। তাই আমার স্বামীকে বলি এই রুমে তো কোন ছেলে ঢোকার কথা না। তখন আমার স্বামী আমাকেও একটা চড় মারেন। এরই মধ্যে যারা ঘটনাটা ভিডিও করছিলেন আমি তাদের একজনের হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। সে সময় একটা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 
 
তিনি আরও বলেন, আমার পরিস্কার ধারণা যে তাদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল। কারণ এডিসি স্যার তার সহকর্মীর অসুস্থতার জন্য সেখানে এসেছিলেন এবং বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। তারা চেষ্টা করছিল আমাদের দুইজনকে (হারুন ও সানজিদা) পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা প্রশ্নবিদ্ধ ভিডিও তৈরি করে সেটা ভাইরাল করবে। এডিসি স্যার তখনও অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর থানা থেকে টিম আসে। তারপর তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
 
রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনকে না জানিয়ে তার স্ত্রী এডিসি হারুনের সঙ্গে চিকিৎসকের সিরিয়ালের জন্য কেনো যোগাযোগ করেছিলেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো ঝামেলা চলছিল কিনা এবং স্ত্রী সানজিদা আফরিন নিপার এমন বিস্ফোরক মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied