বিএনপিকে রুখে দিতে আমাদের নারী কর্মীরাই যথেষ্ট : তথ্যমন্ত্রী

রাজনীতি ডেস্ক

শুক্রবার, ৩ জুন ২০২২, রাত ০৯:২৭


তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণমানুষ ও খেটে খাওয়া মানুষের দল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে সবসময় ছিল, রাজপথে আছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে আওয়ামী মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগের কর্মীরা মাঠে নেমেছে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের নারী কর্মীরাই যথেষ্ট।

শুক্রবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী মহিলা লীগ আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যেসব দলের সঙ্গে মিটিং করছে এসব দলের বাস্তবে কোনো অস্থিত্ব নেই। অস্থিত্ববিহীন দলের সঙ্গে মিটিং করে করে তারা একটি সংবাদ পরিবেশন করছে মাত্র। অস্থিত্বহীন দলের সঙ্গে মিটিংয়ের মাধ্যমে বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রকাশ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে পণ্যের মূল্য নিয়ে কথা বলছেন। অপরদিকে সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যবসায়িদের ফোন করে পণ্য মজুদ কর, দাম বাড়াও, দেশে পণ্যের সঙ্কট সৃষ্টি কর বলে নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাদের ঘরনার ব্যবসায়িরাসহ অন্যান্য ব্যবসায়িরা এ বার্তা পেয়ে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিদিন বিএনপি বিভিন্ন দলের সঙ্গে মিটিং করছে। তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে যেসব দল হাজির হয়, এসব দল যে দেশে আছে এই মিটিংয়ের পর মানুষ জানতে পারে, এ ধরনের একটি দল দেশে আছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন দেশে নানা ধরনের পার্টি আছে। রাতের বেলা মানুষ গুম করেন এমন একটা পার্টি, মরিচের গুড়া মারে সেটা একটা পার্টি, রাতের বেলা মলম মেখে দেয় সেটাও একটা পার্টি। সভাপতি থাকলে সেক্রেটারি নেই সে ধরনের পার্টিও আছে। নানা ধরনের পার্টির সঙ্গে বিএনপি মিটিং করছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নাকি ডান-বাম সবার সঙ্গে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ডান-বাম অতিডান অতিবাম সবার ঐক্য করেছিল। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে তারা নির্বাচনও করেছিল। ফলাফল বিএনপির ঘরে মাত্র পাঁচটি আসন। সুতরাং এবারও সর্বোচ্চ সংখ্যক দলের সঙ্গে মিটিং করেও গতবারের চেয়ে বেশি ভালো ফল হবে বলে জনগণ মনে করে না।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, নির্বাচন পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব। যদি তারা আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর হস্তে তাদের আমরা প্রতিহত করব।

হাছান মাহমুদ বলেন, সমগ্র দেশে বিএনপি-জামায়াত তাদের দোসরদের নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটিয়ে অছাত্র ও ছাত্রদের বাবাদের সমাবেশ ঘটিয়ে সেখানে তারা স্লোগান দিয়েছে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে তারা দুটো জিনিস প্রমাণ ও স্বীকার করেছে। একটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে হয়েছে। আরেকটি কথা বলেছে তারা, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি। ইউরোপে এক ইউরোর তেল চার ইউরোতে বিক্রি হচ্ছে। এক ইউরোর রুটি দুই ইউরোতে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কোনো কোনো খাদ্য পণ্যের দাম দুই থেকে তিন’শ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে সেভাবে বৃদ্ধি পায় নাই।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যুদ্ধ ও আমদানি নির্ভর পণ্যের অজুহাত দিয়ে কিছু কিছু মজুতদারি চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য মজুত করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধু মামলা, জরিমানা নয় প্রয়োজনে তাদের গ্রেপ্তারও করা হবে। সুতরাং কেউ মজুতদারি ও আড়তদারি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালাবেন না।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা শামীমা হারুন লুবনার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ। 

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied