শোক দিবসের স্মরণ সভায় জগন্নাথ হলের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৩, রাত ০২:১৮


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে হল শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের স্মরণ সভায় দেশের প্রধান চার ধর্মাবলম্বী বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানেরর এক অন্য রকম দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
 
শনিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় হলের উপাসনালয়ে এ স্মরণ সভা আয়োজিত হয়। হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস।
 
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জেনারেল জিয়া সরাসরি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ১৯৭৬ সালে বরিশালে ১৫ আগস্টে প্রথম শাহাদাত বার্ষিকীতে হত্যার বয়ান করার জন্য যাই। আমাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করে সারারাত ফ্যানের গ্রিলের সাথে ঝুলিয়ে টর্চার করেছে। ১৪ মাস কারাগারে ছিলাম। প্রায় ৩ হাজার সামরিক মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। এই তো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ধর্ম নিরপেক্ষতাকে উৎখাত করে আমাদেরকে একটি সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কে দিয়েছে? জেনারেল জিয়াউর রহমান। আমাদের লড়াইটাকে বুঝতে হবে। এ লড়াই কিন্তু ক্ষমতার লড়াই নয়। এ লড়াই হলো আদর্শিক লড়াই। এই আদর্শিক লড়াই আমাদের জিততে হবে।’
 
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা নয় মাস যুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য সবচেয়ে কাল। তাকে হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল খুনি জিয়াউর রহমান, যে পর্দার নেপথ্যে থেকেই এ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছিল।’
 
তিনি ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীর কাছে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করার জন্য দাবি জানান।
 
সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য রেমন্ড আরেং, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
 
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।

 
সভাপতির বক্তব্যে হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ আর ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ আজকের জগন্নাথ হলের স্মরণ সভার এই মঞ্চ, যেখানে আজ সব মতের, সব পথের মানুষ একত্র হয়েছেন। এই মঞ্চ থেকে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আমাদের এখন প্রতিশ্রুতি গ্রহণের সময় এসেছে, আগামী নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আরো একটি গণতান্ত্রিক বিজয় উপহার না দেওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।’
 
সভার সঞ্চালক ও হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন বলেন, ‘আমাদের হল হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান তিন ধর্মের মিলনস্থল। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের বার্তা দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে এ বছর প্রথমবারের মতো আমরা দেশের প্রধান চার ধর্মের মানুষকেই অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।’

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied