এক বছরে কুঋণ বেড়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ৬ আগস্ট ২০২৩, দুপুর ০২:৪৬


এক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অবলোপন করা কুঋণ বেড়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা। সমাপ্ত ২০২২-২০২৩ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ গত জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের অবলোপন করা কুঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে অবলোপন করা কুঋণের স্থিতি ছিল ১৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির’ (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অবলোপন করা ঋণের স্থিতি কমাতে পারেনি ব্যাংকগুলো। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় স্থিতির পরিমাণ ৬১৮ কোটি টাকা বেশি।

অন্যদিকে, সমাপ্ত অর্থবছরে অবলোপন করা ঋণ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো আদায় করেছে মোট ২০৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। অবলোপন করা ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সোনালী, জনতা ও বিডিবিএল এপিএ’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক। 

সূত্র জানায়, অবলোপন করা ঋণের শীর্ষে আছে সোনালী ব্যাংক। এরপর রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বিডিবিএল ও রূপালী ব্যাংক। তবে, এপিএ’র লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, একমাত্র বেসিক ব্যাংকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি অবলোপন করা ঋণ রয়েছে।

এপিএ’র আওতায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছর শেষে সোনালী ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে গত জুন শেষে ব্যাংকটির অবলোপন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে, এপিএ’র আওতায় গত অর্থবছরে অবলোপন করা ঋণ থেকে সোনালী ব্যাংকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় করা হয়েছে ৫০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

জনতা ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৮৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে, অবলোপন করা ঋণ থেকে জনতা ব্যাংকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। 

অগ্রণী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, অবলোপনকৃত ঋণ থেকে অগ্রণী ব্যাংকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৪২ কোটি টাকা।

রূপালী ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকটির ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে, অবলোপনকৃত ঋণ থেকে রূপালী ব্যাংকের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

 

 

বেসিক ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে অবলোপন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে, অবলোপনকৃত ঋণ থেকে বেসিক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৩০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

বিডিবিএলের অবলোপন করা ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকটির অবলোপন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে, অবলোপন করা ঋণ থেকে বিডিবিএলের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

 

অবলোপন করা মন্দ বা কুঋণ সম্পর্কে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এপিএ’র চুক্তি অনুযায়ী প্রতি তিন মাস পর ব্যাংকগুলো আমাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য পাঠায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আগামীতে ব্যাংকগুলো যে ইন্ডিকেটরের ওপর খারাপ করবে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied