কুমিল্লায় সিএনজি চালক ইকতার হোসেনকে হত্যা, ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪, রাত ১১:২৫


কুমিল্লার দাউদকান্দিতে সিএনজি অটোরিকশায় চালক ইকতার হোসেনকে পানিতে চুবিয়ে মারার অপরাধে চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত বৃহস্পতি বার ১১ জানুয়ারি দুপুরবেলা কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায়ে দেন মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের নলি মিয়ার ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর (৩০) দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (মন্তাজ সাহেবে বাড়ি) গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে ইমরান (১৮) এবং দাউদকান্দি উপজেলার জুরানপুর গ্রামের ডিপটি’র ছেলে সুমন (২২) ও দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (রহমান সাহেবে বাড়ি) গ্রামের রুবেল (২৩)।

মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সিএনজি অটোরিকশা চালক ইকতার হোসেন রাতে বাড়ীতে ফিরে না আসায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার পরিবারের লোকজন। পরদিন দাউদকান্দি থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন, ০২ জন সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাইকারীকে দাউদকান্দি থানাধীন পুটিয়া বেকিনগর হিমালয় মৎস প্রজেক্টের মাঝামাঝি ঢাকা চট্টগ্রাম মহা সড়কের উপর স্থানীয় জনগণ আটক করে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। আরও জানতে পারে যে ছিনতাইকারীরা যাত্রী বেশে সিএনজিতে উঠিয়া প্রস্রাবের কথা বলে গাড়ীটি থামিয়ে ভিকটিম ইকতারকে এলো পাতারিভাবে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে পানিতে চুবিয়ে তাঁকে হত্যা করে।

কচুরিপানা দিয়ে ডেকে লাশ ঘুম করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনগণ আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের আঃ রহমান বাবুর্চীর ছেলে নিহতের বড়ভাই মোঃ আক্তার হোসেন বাদী হয়ে একই দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের নলি মিয়ার ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর (৩০), দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (মন্তাজ সাহেবে বাড়ি) গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে ইমরান (১৮) এবং দাউদকান্দি উপজেলার জুরানপুর গ্রামের ডিপটি’র ছেলে সুমন (২২) ও দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (রহমান সাহেবে বাড়ি) গ্রামের রুবেল (২৩) কে আসামি করে দঃ বিঃ ৩০২/৩৯৪/২০১/৪১১ ধারার বিধানমতে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই তপন কুমার বাকচী উল্লেখিত ০৪ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাহাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন।

(যাহার অভিযোগপত্র নং-২৪৮। তৎপর মামলটি বিচারে আসিলে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল আসামিগণের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জ গঠন করে রাষ্ট্রপক্ষে ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি অন্তে ও আসামি জাহাঙ্গীর ও ইমরান এর স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামিগণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাহাদিগকে দঃ বিঃ ৩০২/৩৯৪/৩৪ ধারায় দোষী সাবস্থক্রমে পলাতক আসামি কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের নলি মিয়ার ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর (৩০), দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (মন্তাজ সাহেবে বাড়ি) গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে ইমরান (১৮) এবং দাউদকান্দি উপজেলার জুরানপুর গ্রামের ডিপটি’র ছেলে সুমন (২২) ও দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (রহমান সাহেবে বাড়ি) গ্রামের রুবেল (২৩) কে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেদন্ডিত করেন।

রায়ে আরও উল্লেখ করেন মৃতুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিগণের মৃত্যু দণ্ডাদেশ মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশন কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত রুজ্জুতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন রায় ঘোষণাকালে সকল আসামি আদালত কাঠগড়ায় অনুপস্থিত ছিলেন
রাষ্টপক্ষের কৌশলী আইনজীবী অতিঃ পিপি মোঃ নুরুল ইসলাম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন আশা করছি মহামান্য হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করিবেন এবং আসামিপক্ষের এডভোকেট এম এ আদনান ও এডভোকেট ফেরদৌস আক্তার বলেন রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপীল করবে।

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied