শিক্ষক আসলে কোথায় থামাতে চেয়েছিলো গাড়িটি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২, বিকাল ০৬:৫৩


দূর্ঘটনাকে স্বয়ং স্রষ্টা নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষ কেবল দূর্ঘটনা রোধের সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে। শান্তিময় পৃথিবীতে সকল কিছুতে নিয়ন্ত্রণ থেকে সাবধান থাকার জন্যই জগতে শিক্ষার আবির্ভাব। শিক্ষাই মানুষকে ভালো মন্দের বোধ শিখিয়েছে। শাসন-আইন শিখিয়েছেন। সভ্যতার রক্ষণাবেক্ষণ শিখিয়েছেন। প্রেম শিখিয়েছেন। এমনকি স্রষ্টাকেও পরিচিত করেছেন শিক্ষা!

এই শিক্ষাকেই যুগে যুগে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষকের জন্ম হয়েছে। প্রয়োজনবোধে পৃথিবীর সকল সৃষ্টিই একেকজন শিক্ষক। একবিংশ শতাব্দীতে আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার কতটুকু সমন্বয় পাচ্ছি! কি শিখছি? যারা আমরা আজন্মকাল ছাত্র হয়ে বাঁচতে চাই! না জানাকে জানতে চাই!

গতকাল ঢাবির এক শিক্ষকের বোধহীন হত্যাকান্ডের ঘটনায় শিক্ষক পেশাকে কলঙ্কিত করেছে! পুরো জাতিকে ভাবিয়ে তুলছে, শিক্ষকের প্রপার শিক্ষাতে গলদ! এমন বোধহীন শিক্ষকরা নিজ থেকেই নিপাত যাক। না হয় ছাত্রেরা শিক্ষক হয়ে গেলে এসব কুলাঙ্গার শিক্ষকদের আবারও বাল্যশিক্ষায় ভর্তি করানো হবে। কারন, বাংলা মায়ের বর্ন কখনোই অমানবিক নয়।

ধরেই নিলাম দূর্ঘটনায় শিক্ষকের হাত নেই। কিন্তু রহিমা বেগমকে বাঁচাতে কি একটুও দ্বায় ছিলো না.?? শিক্ষক তো পরের বিষয়, একজন মানুষও কি এমনটা পারে.? ভিডিও ও সংবাদে দেখলাম নিজে ড্রাইভ করে প্রাইভেট কারের চাকার মাঝে প্রায় দেড় কিলোমিটার টেনে হেচরে নিয়ে যাচ্ছে কোনো শিক্ষকের নিকটাত্মীয় হতভাগা রহিমাকে।

যখন ঘটনাটি দূর্ঘটনা! শিক্ষক নিজেও সচেতনভাবে এমন ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। থাকার কথাও না।

মোটরসাইকেল আরোহী রহিমা বেগম ছিটকে পরে প্রাইভেট কারের বাম্পারে আটকে যায়। একটি প্রাইভেট কারের সাথে একজন মানুষের মতো কিছু আটকে গেলে অবশ্যই চালক গাড়ীতে আরোহী ব্যক্তিরা টের পান। কেনো, শিক্ষক দ্রুত গাড়ীটি থামিয়ে রহিমাকে নিজ দ্বায়িত্বে হাসপাতালে নিয়ে গেলো না.?


বরং শিক্ষক গাড়ীর গতি বাড়িয়ে দিলেন!!! যেমন গতিতে হাইওয়ে রোডে গাড়ী চলে।

এতো ভিড়ের মধ্যে, এতো এতো লোকের মানবিক চিৎকারেও কি অমানবিক শিক্ষকের বোধদয় হলো না.? গাড়ীটি থামাবেন। একসময় অবশ্যই থামাবেন। সেটা চালকও জানেন। কিন্তু আসলে কোথায় থামাবেন তা ঐ মহূর্তে জানে না। ধরেই নিলাম হত্যাকান্ড পেড়িয়ে গাড়ীটি নিরাপদে পৌঁছে গেলো। এই নিরাপদে এসেও কি শিক্ষক নিজের কাছে, পরিবারের কাছে, শিক্ষার কাছে, মানবতার কাছে নিরাপদ থাকবে!!!


মনে প্রশ্ন জাগবে না? কি করলাম!!
আমি কি পারতাম না, দূর্ঘটনা বুঝতে পেরেই গাড়ীটি থামিয়ে রহিমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে?
হয়তো রহিমা প্রাণে বেঁচে যেতো!
আমি তো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের শিক্ষক!

লেখা - মুরাদ নূর
সুরকার ও সংস্কৃতি কর্মী
[email protected]

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied