আমাকে মনে রাইখেন, ভুইলেন না : তামিম

ক্রীড়া ডেস্ক

বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সকাল ০৭:৪০


জাতীয় দলকে বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেওয়ার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল তামিম ইকবালের। অথচ দেশসেরা সেই ওপেনারের এবার বিশ্বকাপেই খেলা হচ্ছে না। আইসিসির মেগা আসরের দল থেকে বাদ পড়ার পর আজ (বুধবার) মুখ খুলেছেন তামিম। গত কয়েকদিন ক্রিকেট পাড়ায় উদ্ভব হওয়া নাটকীয় সব পরিস্থিতি নিয়ে দেশসেরা এই ওপেনার ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ১২ মিনিটের সেই ভিডিওর শেষে তামিম অনুরোধ করেছেন তাকে মনে রাখতে; বলেছেন কেউ যেন তাকে ভুলে না যান।

বিশ্বকাপ দলে না থাকা এবং বিসিবির সঙ্গে পুরো যোগাযোগ প্রক্রিয়া তুলে ধরেন দেশসেরা ওপেনার। ভিডিও বার্তার শেষদিকে তামিম সকলের উদ্দেশে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেন, ‘একটাই রিকোয়েস্ট করব সবাইকে- আমাকে মনে রাইখেন, ভুলে যাইয়েন না।’

এর আগে ভিডিওর শুরুতে তামিম বলেন, ‘যে জিনিস ঘটেছে, সেটা আমি আপনাদের ধাপে ধাপে জানাতে চাই। কারণ, আমার কাছে মনে হয়েছে এটা আমার ভক্ত বা ক্রিকেটপ্রেমীদের জানা দরকার। গত জুলাইয়ে আমি অবসর নিই, সেটার একটা কারণ ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর চাওয়াতে ফিরে আসি। পরের দুই মাসে প্রচণ্ড কষ্ট করেছি। এরকম কোনো সেশন বা ব্যয়াম নাই যা ওনারা (ফিজিও) চেয়েছে, আমি করিনি।’

‘খেলাটা যখন কাছাকাছি আসল, আমি খুব বেশি খুশি ছিলাম না, যা কিছু ঘটেছে শেষ চার-পাঁচ মাসে। যখন আমি খেলা শুরু করলাম ৩০-৩৫ ওভারের মতো ফিল্ডিং করলাম। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসল, আমি সম্ভাব্য সেরাটা করেছি। ওই মুহূর্তে দরকার ছিল কিছু রান করা, ব্যাটিংটা কেমন হচ্ছে দেখা। ওই ম্যাচের পর আমি অনেক খুশি ছিলাম। শেষ চার-পাঁচ ম্যাচে যা হয়েছে এগুলো মাথায় ছিল না। আমি বিশ্বকাপ খেলার দিকে তাকিয়ে ছিলাম’, যোগ করেন তামিম।

২০১২ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) পুনে ওয়ারিয়র্সে তিন নম্বরে ব্যাটিং করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তামিমকে। যে কারণে সেই আসর পুরোটা বেঞ্চে বসে থেকেছেন তামিম। শর্ত মেনে একাদশে খেলতে রাজি হননি এই ওপেনার। এবার বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকেও বাদ পড়লেন প্রায় একই কারণে।

তামিমকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাব দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটি গ্রহণ করেননি সাবেক এই ওয়ানডে অধিনায়ক। তিনি ওপেনিংয়েই খেলতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে মত পার্থক্য বজায় থাকায় স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তামিমকে।

তামিম বলেন, ‘বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে আমাকে বললেন, ‘তুমি বিশ্বকাপে যাবা, কিন্তু তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। একটা কাজ করো, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না।’ আমি বলেছি, এখনো ১২/১৩ দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তো কী কারণে খেলব না? তখন বললেন, ‘আচ্ছা তুমি যদি খেলো তাহলে আমরা পরিকল্পনা করছি, তুমি নিচের দিকে খেলবা।’

‘আমার আসলে তিন কিংবা চারে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা নেই। স্বাভাবিকভাবে কথাটি আমি ভালোভাবে নিইনি। আমি উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি বিষয়টি পছন্দ করিনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে, ইচ্ছে করে। এটা ঠিক হলো, ওকে, এখন নতুন আরেকটা জিনিস করি—এটা আমি অনুভব করেছি’, যোগ করেন তামিম।
 
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে শতভাগ ফিট ক্রিকেটারকে চেয়েছিলেন। বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর কথায়ও তামিমকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবেই তেমনটাই বলা হয়েছিল। কিন্তু তামিম তার ফিটনেস নিয়ে জানালেন ভিন্ন কথা, ‘ফিজিও’র রিপোর্টে কোথায়ও ছিল না আমি খেলতে পারবো না। চাইলে যে কেউ এটা নিয়ে আমার সঙ্গে সরাসরি বসতে পারে। প্রথম ম্যাচ খেলার পর আমি ভালো অবস্থায় ছিলাম। আমার শরীরে ব্যথা ছিল এটা ঠিক। প্রেস কনফারেন্সেও আমি তা বলেছি। মিডিয়ায় এসেছে, পাঁচ ম্যাচের বেশি খেলতে পারবো না, আমার ইনজুরি। এটা আমার বিশ্বকাপে না যাওয়ার কারণ নয়। ব্যথা থাকলেও আমি ইনজুরড নই।’

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied