‘ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া ২০২২’ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বে রুহিত সুমন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২, দুপুর ১১:৫৩


‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’, কর্ণাটকের মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিশাল অডিটরিয়ামে যখন পরিবেশনা হচ্ছিল, তখন বাংলাদেশের শত যুবর কণ্ঠেও উচ্চারিত হচ্ছিল বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ।

বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস , সংস্কৃতি ও বন্ধুত্ব দুই দেশের সীমানার মতোই কাছের । এই বন্ধন, বিশ্বাস, ভ্রাতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করতে সংস্কৃতির আদান-প্রদানে ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ইচ্ছায় শুরু হয় 'বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া'।

এই আয়োজনের আওতায় প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন অঙ্গনের ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে ভারত সফরে নিয়ে যায় ঢাকা ভারতীয় হাইকমিশন। ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অষ্টমবারের মতো বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বরাবরের মতোই দীর্ঘ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শত শত তরুণ-তরুণীর মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মোঃ সুমন রহমান (রুহিত সুমন) । বলা হচ্ছে, ভারতের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যুবশ্রেণী । বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাচ্ছেন, তারাও যুবশ্রেণীর । বিভিন্ন অঙ্গনের এই তরুণ-তরুণীরাই আগামীতে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশকে । তাদের মধ্যে একজন প্রতিভাবান উদ্যোক্তা, সংগঠক ও উপস্থাপক রুহিত সুমন ।

এবারের সফরে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ পর্বটি ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা । ভারতের রাজধানী দিল্লি , গার্ডেন সিটি খ্যাত ব্যাঙ্গালোর , সিল্ক এর শহর মাইসোর ভ্রমণের জন্য এবারের পর্বটি সাজানো হয় । যুব প্রতিনিধি দলকে পরিদর্শন করানো হয় প্রধানমন্ত্রীর সংগ্রহশালা, তাজমহল, আগ্রা রেড ফোর্ট, ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা, মিনিষ্ট্র অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স, ইন্ডিয়া গেইট, কর্নাটাকা রাজ ভবন ও বিধান সভা, ইন্ডিয়ান ইনষ্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট ব্যাঙ্গলুরু, ইনফোসিস লিমিটেড, মাইসোর প্যালেস, বৃন্দাবন গার্ডেন ও মাইসোর ইউনিভার্সিটি । ভারতের মহামন্য রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি কর্নাটাকা গভর্নর, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে । ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের আমন্ত্রণে গালা ডিনার আয়োজনে ভারতের যুব ও ক্রীড়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ সিং, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশিত প্রামাণিকের সাথে আলোচনা হয় বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধিদের ।

উল্লেখ্য, মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব শান্তি সম্মেলনে 'গ্লোবাল পিস অ্যাওয়ার্ড', ভারতে "আন্তর্জাতিক যুব পুরস্কার", দুবাইয়ে
"আন্তর্জাতিক স্কুল অ্যাওয়ার্ড", থাইল্যান্ডে "আন্তর্জাতিক এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড" ইংল্যান্ড থেকে "স্টার অফ কোভিড অ্যাওয়ার্ড" এ ভূষিত হয়েছেন সুমন। এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে পেয়েছেন বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং সম্মাননা। প্রায় শতাধিক সুবিধাবঞ্ছিত শিশু ও নারীদের বিনাবেতনে পড়াচ্ছেন সুমন। প্রতিষ্ঠা করেছেন ময়ূরপঙ্খী আদর্শলিপি স্কুল, ময়ূরপঙ্খী কোরআন শিক্ষা আসর, ময়ূরপঙ্খী নারী শিক্ষাকেন্দ্র, ময়ূরপঙ্খী সৃজনশীল লাইব্রেরী, ময়ূরপঙ্খী ইয়ুথ এন্ড স্পোর্টস কাউন্সিলসহ বহু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।

প্রসঙ্গত, রুহিত সুমন তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা "ময়ূরপঙ্খী" এর মাধ্যমে মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবকালিন সময়ে করোনা প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা, ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়, অসহায়, দুঃস্থ ও ছিন্নমূলদের মাঝে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান প্রদান, সচেতনতামূলক লিফলেট প্রদান, খাদ্য ও ইফতারসামগ্রী প্রদান, স্বনির্ভরতা ও কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই মেশিনসহ নানামুখি কর্মসূচি চলমান রয়েছে ময়ূরপঙ্খী সংস্থাটির। পাশাপাশি বন্যা দূর্গতদের খাদ্যসামগ্রী, আর্থিক সহযোগিতা, সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়।

২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ময়ূরপঙ্খী শিশু-কিশোর সমাজকল্যাণ সংস্থা সমাজের অবহেলিত, দুঃস্থ মানুষের কল্যাণ, সুবিধাবঞ্ছিত শিশু ও নারীদের শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকার এবং যুব কল্যাণ নিয়ে কাজ করছে। দেশের বাইরে ইতোমধ্যে ৪০টির বেশি দেশে ময়ূরপঙ্খীর প্রতিনিধি রয়েছে।

রুহিত সুমন এর আগে ভারত, মালয়েশিয়া, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। তিনি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম, টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়ায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর একজন ইভেন্ট অর্গানাইজার ও উপস্থাপক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। ময়ূরপঙ্খী বিচিত্রা নামক ম্যাগাজিনের প্রকাশক ও সম্পাদক তিনি। মুন্সিগঞ্জের সন্তান সুমন রহমান বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ছোটদের জন্য তার বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় দৈনিক, মাসিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে।

এমএসি/আরএইচ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

Link copied